Ad: ০১৭১১৯৫২৫২২
১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন আদালত
  3. আইন শৃংখলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি অর্থনীতি
  6. খেলাধূলা
  7. চাকরি-বাকরি
  8. জাতীয়
  9. জীবনের গল্প
  10. ধর্ম
  11. নির্বাচনী হাওয়া
  12. ফিচার
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. রাজধানী
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সিদ্ধান্তহীনতায় ঝুলে যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা

নিউজ রুম
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ ৭:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লাখোকণ্ঠ নির্বাচনী ডেক্স: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে‘গোপন কক্ষের ডাকাত’ ধরতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনী বিশ্লেষকরা কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের পেক্ষাপটে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের স্বার্থে এটা করা জরুরি। তবে নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইসি সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তার মতে, কারিগরি জটিলতা, জনবল এবং সময়মতো তহবিল (অর্থ) প্রাপ্তি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি ইভিএম-ক্রয় প্রকল্পে অর্থায়ন না হওয়ায় এখন সিসিটিভি (ক্লোউজড-সার্কিট টেলিভিশন) ক্যামেরার বিষয়টি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে কমিশনে।

ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের সুফল গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে পেয়েছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। গোপন কক্ষে অনুপ্রবেশ, আঙুলের ছাপ নিয়ে একজনের ভোট অন্যজন দিয়ে দেয়া, কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারসহ নানা অনিয়মের ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখে ঢাকা থেকে ওই নির্বাচন বন্ধ করে দেয় কমিশন।

এতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়লেও সাবেক নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচনী বিশ্লেষকসহ বিভিন্ন মহলের প্রশংসা পায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন।

ফলে পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারে উৎসাহ পায় কমিশন। ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচনেও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। জেলা পরিষদসহ স্থানীয় কিছু নির্বাচনেও সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়।

এরপর বিএনপির ছেড়ে দেয়া সংসদীয় ৬টি আসনে উপনির্বাচন হয় গত ১ ফেব্রুয়রি। তবে ভোটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়নি।

যে পদ্ধতি ভোটে স্বচ্ছতা আনছিল, তা থেকে কেন সরছে কমিশন, এমন প্রশ্নে ওঠে।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, বাজেট বরাদ্দ না থাকায় এসব উপনির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি ব্যাখা করে এই কমিশনার বলেন, ‘অর্থটা তো বাৎসরিক ভিত্তিতে দেয়া হয়। বর্তমান অর্থবছরে যে টাকা দেয়া আছে, যেসব নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেছি সেগুলোর ব্যয় কিন্তু এগজিস্টিং টাকার মধ্যেই। সরকারের কাছে আমরা এক্সট্রা বাজেট চাইনি। এই আর্থিক মন্দার মধ্যে আমাদের চাওয়াও যুক্তিযুক্ত না। এসব উপনির্বাচনে সিসি ক্যামেরার জন্য আমাদের হাতে টাকা ছিল না।’

এখন প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে সব কেন্দ্রে এবং সব ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের বাজেট কীভাবে আসবে।

ইসি সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ও বুথের সংখ্যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ইসির তথ্য অনুয়ায়ী একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল প্রায় ১০ কোটি ৪২ লাখ। তিনশ’ আসনে ভোটকন্দ্রে ছিল ৪০ হাজার ৬৫৭। ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩শ’র বেশি। এখন ভোটার ১১ কোটি ৩২ লাখের বেশি। হালনাগাদ শেষে এই সংখ্যা আরও কিছু বাড়বে।

ফলে ভোটকেন্দ্র বেড়ে হতে পারে ৪৫ হাজার। গড়ে একটি ভোটকেন্দ্র ৫টি করে বুথ বা ভোটকক্ষ হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনশ’ আসনে মোট ভোটকক্ষ হতে পারে প্রায় সোয়া ২ লাখ।

অর্থাৎ প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি করে মোট সোয়া ২ লাখ সিসিটিভি ক্যামেরা লাগবে। আবার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বাইরে দুটি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হলে আরও প্রায় ৯০ হাজার ক্যামেরা লাগবে। সব মিলিয়ে সিসিটিভি ক্যমেরা প্রয়োজন হবে প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার।

পর্যবেক্ষণে কত লোক লাগবে, নিয়ন্ত্রণকক্ষ কত বড় হবে

কেন্দ্রীয়ভাবে এতগুলো সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণের (মনিটরিং) জন্য বিপুল জনবল এবং বিশাল বিশাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষ প্রয়োজন হবে।

একজন পর্যবেক্ষক যদি গড়ে ১৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং করেন তাহলে ৩ লাখ ১৫ হাজার ক্যামেরা মনিটরিং করতে ২১ হাজার লোক লাগবে। যারা মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন, পক্রিয়া জটিল হলেও তাদের নিরপেক্ষতার বিষয়টি আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবে।

একই স্থানে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করতে চাইলে প্রয়োজন হবে স্টেডিয়ামের মতো জায়গা। তবে বড় কোন সম্মেলনকেন্দ্রও এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।

খরচ কেমন হবে

সম্প্রতি ছোট পরিসরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন (কুসিক), গাইবান্ধা সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছাড়াও যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার হয়েছে, সেখানে ঠিকাদারের মাধ্যমে ভোটের সময় এই সেবা নেয়া হয়েছে।

ইসির একটি সূত্র বলছে, সব ব্যয় ধরে একটি ক্যামেরার পেছনে গড়ে ৪ হাজারের কিছু বেশি খরচ পড়েছে। বড় পরিসরে এই ব্যয় কিছুটা কমে আসলেও এভাবে তিনশ’ আসনের সব ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারে অন্তত ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে অনুমান করা হচ্ছে।

ইসি নিজে সিসিটিভি ক্যামেরা কিনলে খরচ এরচেয়ে বেশি হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে চার হাজার টাকা, এটা শুধু ক্যামেরার দাম না। এরসঙ্গে অন্যান্য খরচ যুক্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টলেশন, নেটওয়ার্কিং, রাউটার, ইন্টারনেট খরচ, ঢাকায় কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল স্থাপনসহ নানা ব্যয় রয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ সেল স্থাপন, ব্যবস্থাপনা এবং জনবলের জন্যও খরচ রয়েছে।

তিনি জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও ‘থার্ড পার্টির’ (তৃতীয় পক্ষ) মাধ্যমে এই সেবা নেয়ার পক্ষে ইসি। যেহেতু একটি জাতীয় নির্বাচন শেষে একসঙ্গে তিন লাখ সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবহার আসবে আবার পাঁচ বছর পরে। তাই এত সিসি ক্যামেরা কেনায় বিপুল ব্যয় এবং এগুলো সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের ঝুঁকি নিতে চায় না কমিশন।

নির্বাচন কমিশনাররা যা বলছেন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে সব ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে সিসি ক্যামেরা মনিটর করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। লাখ লাখ ক্যামেরা মনিটর করে ব্যবস্থা নেয়া আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। আরেকটা টেকনিক্যাল সাপোর্টের মাধ্যমে মনিটর করে দোষী ব্যক্তিদের বের করে সেই মুহূর্তে ব্যবস্থা নেয়া যাবে কি না, সেটাও একটা প্রশ্ন থেকে যায়।’

এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘যদি পুরোটা আমরা না করতে পারি তাহলে আমাদের কী করা উচিত হবে, সেটাও কিন্তু আমাদের চিন্তা আছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আমাদের চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না।’

আরেক নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত। সেগুলোর সমাধান হলেই এ যন্ত্র ব্যবহার করা হবে।

তিনি বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা তো কেবল বললেই হবে না। অর্থের ব্যাপার যেমন আছে ম্যানেজমেন্টের (ব্যবস্থাপনার) ব্যাপারও আছে। চার লাখ সিসি ক্যামেরা মনিটর করবেন কীভাবে! সেটার একটা ওয়েআউট (পদ্ধতি) যদি বের করা যায় তাহলে অবশ্যই আমরা ব্যবহার করব।’

 



এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।