ইসমাইল হোসেন স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ভাটারা এলাকায় জমি দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যাবসাসহ নানা অপরাধের মাফিয়া সিন্ডেকেট নিয়ন্ত্রণ করছে রেজা গ্যাংয়ের প্রধান রেজাউল করিম এই মাফিয়া বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেস হত্যাসহ একাধিক মামলা থাকলে ও বেপরোয়া কার্যক্রম আরো বাড়ছে। রেজা গ্যাংগের বিরুদ্ধে কথা বললেই বাড়ে বিপদ। যে কারনে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা ভুক্তভূগীরা।
এক নারী বাদী হয়ে রেজা বাহিণীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তার অভিযোগ, তাদের জমি জোরপূর্বক দখল করেন রেজা গ্যাং প্রতিবাদ করায় তার একমাত্র ছেলেকে হত্যা করে লাস গুমের চেষ্টা করে এ মাফিয়া গ্রুপ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান ভাটারার নূরেরচালা বোর্ডঘাট, সাঈদ নগর এলাকায় প্রকাশ্যই জমি দখল ও চাঁদাবাজী করছে রেজা গ্যাং। কেউই এদর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কার সাহসটুকু ও পাচ্ছেনা। কখন যে কার কাছে চাঁদা দাবী করেন এ আতঙ্কে থাকেন ভাটারার বাসবাসকারী ভূমিখেকো মাফিয়া চক্রের প্রধান রেজাউল করিম রেজা ভাটারার বোর্ডঘাট নূেেরর চালার আবুল হাকিমের ছেলে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫ সালে ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম ফারুকের ক্রয়কৃত নূরের চালা বোর্ডঘাট ইঞ্জিনিয়ার মাঠ প্রকাশ্যে দখল করে নেয় রেজা গ্যাং। এ বিষয়ে ভাটার থানায় মামলা করেন নজরুল । মামলা নং- ১৯ (৩৩৯)। মামলা হওয়ার পর রেজা গ্যাং ক্ষিপ্ত হয়ে নজরুলের পরিবারের উপর হামলা করেন এত বেশ কয়েকজন রক্তাত হয়ে জখম হন। ইঞ্জিনিয়ার নজরুল বাদী হয়ে বাটার থানায় আরেকটি মামলা করেন যার নং-২০ (৩৪০)। ২০২২ সালে নুরেরচালা এলাকার মৃত আবদুল কাদের মেম্বারের স্ত্রী পারভীন আক্তার ওতার একমাত্র ছেলে মনোয়ারের জমি দখর করে নেন রেজা গ্যাং। মা-পুত্র জমির জবরদখল ঠেকানোর জন্য বাধা দেয়। এত তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মা পুত্র কে মেরে পেলার হুমকী দেয় রেজা ওতার গ্যায়য়ের সদস্যরা। তারা নিরাপত্তার জন্য ভাটার থানয় জিডি করেন পারভীন। জিডি নং ৬১০/২২। ওউ নারী জমি রক্ষার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিটিশন মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৪/২২। জিডি ও মামলার বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্তি হয় মাফিয়া রেজা। জিডি ও মামলার বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয় মাফিয়া ও তার একমাত্র ছেলে মনোয়ারকে আবারো প্রাণ নাশের হুমকী দেওয়া হয়। ওই অসহায় নারী নিরাপত্তার জন্য ভাটারা থানায় আরেকটি জিডি করেন। ডিজি নং ১৬৫৪/২২ ইং।
পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন, শুধু হুমকি দিয়েই রেজা ও তার বাহীনি থেমে যায়নি। হুমকি বাস্তাবায়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে তার একমাত্র পুত্র মনোয়ারকে হত্যা করে কেরানীগঞ্জে লাশ ফেলে রাখে। রেজা ও তার গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালত হত্যা মামলা দায়ের করেন ওই নারী মামলা নং ৫১৯/২২। এর আগে আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন পারভীন। মামলা নং ৪১১/২২। সুত্র আরও জানায়, ২০২০ সালে সাঈদ-নগরের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান খান সেন্টুর কাছে চাঁদা না পেয়ে তান্ডব চালায় রেজা গ্যাং। চাঁদা দাবি ও মারপিটের ব্যাপারে ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করেন মিজানুর রহমান খান মামলা নং- ৪৮ (৪৫০)। মাফিয়া গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীকান্ডের ছোবল থেকে রক্ষা চান স্বামীহারা নারী জাহানারা। তার বসবাসের একমাত্র আশ্রয় বাসতবাড়ী দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে রেজা গ্যাং। নিরুপায় হয়ে ভাটারা থানায় জিডি করেছেন জাহানারা জিডি নং ১৬৯৭/২২।
নূরে আলম সিদ্দিক নামের এক ভুক্তভোগী শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় জমি প্রদানপূর্বক ঋণ গ্রহণ করেন। সেই জমিও রেজা গ্যাং জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। সাঈদ-নগরের ইকবালের বিল্ডিং বাসাও দখল করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই আওয়ামী লীগ নেতা জানান, মাফিয়া চক্রের প্রধান রেজাউল করিম রেজার পরিবার জামায়াত-বিএনপির রাজনীতি করে। তিনি ১৯৯৫ সালে ভাটারা ছাত্রশিবিরের কর্মী ছিলেন। অপকর্মে জড়িয়ে যায় রেজা। গড়ে তোলেন জমি দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধের দাপুটে গ্যাং।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের এক নেতার হাত ধরে ভাটারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি পদ বাগিয়ে নেয়। এরপর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে রেজা গ্যাং। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ ইসলাম কবির ৩৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। তার ভগ্নিপতি রফিক মাস্টার ভাটারা ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির। তার ভাগ্নি জামাই আবুল কাশেম ভাটারা ইউনিয়নের জামায়ের ইসলামীর সেক্রেটারি। তার চাচাতো ভাই জহির জামায়াতের সক্রিয় নেতা।
রেজা বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড রবিন শামীম ৩৯ নং ওয়ার্ড যুব দলের নেতা, নাজিম উদ্দিন খাঁন, বি. এন. পি নেতা তাজমুল, পলাশ, বেল্লাল হোসেন, জাকির হোসেন, পলাশ, হিমেল (সাবেক ছাত্রদল নেতা) তিতুমির কলেজ ও পিচ্চি বাদল, এর নেতৃত্বে রেজা বাহিনী প্রকাশ্যে ভূমি দখলের তান্ডব লীলা চালাচ্ছে নূরেরচালা, বোর্ডঘাট, সাঈদনগর এলাকায়। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে একাধিক মামলার কথা স্বীকার করেন রেজাউল করিম রেজা। জমি দখল বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য না করেই তাৎক্ষনিক মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।