ইমরুল হাসান: হেলাল! দীর্ঘ চার বছর ধরে গুলশান থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এই হেলাল। তার পুরো নাম মোস্তফা হোসেন হেলাল। এক সময়ে ছিলেন ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী। গুলশান থানা ছাত্রলীগের সভাপতি পদটি তার কাছে ধরা দেয় আলাদীনের চেরাগ হয়ে! দীর্ঘ এই সময়ে বনে গেছেন কোটিপতি। দুদকে রয়েছে ৪২ কোটি টাকার অভিযোগ। চড়েন নোহা স্কয়ার মডেলের একটি গাড়িতে, যার নাম্বার ঢাকা মেট্রো চ ১৯৮৫৯২। থাকতেন ভাটারার একটি বিলাসবহুল ভবনের ৫ম তলার নিজ ফ্লাটে। যা গত জুন মাসে ৫০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। বর্তমানে থাকেন মধ্য বাড্ডার বাজারের গলির একটি বিলাসবহুল ভবনের দ্বিতীয় তলায়।
তার অবৈধ টাকা ইনকামের মাধ্যম গুলশান এলাকার স্পা সেন্টারে চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল, বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদাবাজি, ট্রাভেল এজেন্সি থেকে চাঁদাবাজি সহ রয়েছে অপকর্মের নানা ফিরিস্তি। ব্যক্তিজীবনে করেছেন দুই বিয়ে রয়েছে দুই সন্তান। এক সন্তান জায়ান আলম মানারাত স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে বলেও জানা গেছে।
সকল বিষয়ে হেলালের কাছে জানতে চেয়ে একাধিক বার ফোন করা হলেও ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যান।
এবিষয়ে গুলশান থানা ছাত্রলীগ এর সাবেক সহ সভাপতি হাসিব দেওয়ান ও গুলশান থানা অন্তর্গত ১৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি শাওন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, হেলাল গুলশানে সেচ্ছাচারিতা চরিতার্থ করেন, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ তো তুচ্ছ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারাও তার অশোভন আচারণ থেকে রেহাই পায় না। ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াতে বাধ্য করে, অন্যথায় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, আর তার সবশেষ হাতিয়ার বহিষ্কার।
এদিকে এক সূত্রে জানা যায়, গুলশান থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মিথুন কুমার সৌরভ দলের এই দুঃসময়ে বিদেশ ভ্রমণে গেছেন। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখা গেছে এরই চিত্র।
সকল বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবাদ প্রকাশ করতে। এতে তার কোনো আপত্তি নেই।
তবে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ জানান, হেলালের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী ইতিপূর্বে অভিযোগ দিয়েছেন। জানা যায়, এই হেলাল এক সময় রিয়াজ মাহমুদ অনুসারী ছিলেন, তবে অভিযোগের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গেলেই তিনি ভোল পাল্টে শামীম অনুসারী বনে যান।
সার্বিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আর সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনান জানান, এই কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, আমরা ইতিপূর্বেই কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।