লাখোকন্ঠ, উপসম্পাদকীয়: সারা বিশ্বে মার্চের আট তারিখ আন্তজার্তিক নারী দিবস পালিত হয়।নারীদের সম্মান,অবদান নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।টিভিতে, সংবাদপত্রে,টক শোয়ে চায়ের কাপে ঝড় ওঠে।ব্যস দিন শেষে নারীদের অবস্থা যেই তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে যায়।একজন শেখ হাসিনা,খালেদা জিয়া,দীপু মনি বা শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দিয়ে দেশের পুরো নারী জাতিকে মাপলে হবে না।বিশেষ করে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সমাজের মেয়েদের অবস্থা আজ ও পরিবর্তন হয়নি।একটা সংসারে ঘরে বা বাইরে শ্রম দেবার পর ও সেই সংসার মেয়েদের হয়না।তুচ্ছ কারণে খুব সহজেই সেই সংসার থেকে শূন্য হাতে বেরিয়ে যেতে হয়।মেয়েদের নিজের একটা বাড়ি হয়না।শিক্ষিত কর্মজীবী নারীদের ও নিজের উপার্জিত অর্থের ব্যবহার করতেও অন্যের অনুমোদন লাগে।আমাদের সমাজব্যবস্থায় জন্মের সাথে সাথেই বৈষম্যের স্বীকার হয়।আজান ইকামত তার ভাগ্যে জোটেনা।তার আগমন উপলক্ষ্যে মিষ্টি বিতরন কদাচিৎ হয়।সারাজীবনই মেয়েদের নানা বৈষম্য মেনে নিয়ে কপালের দোহাই দিয়ে কাটিয়ে দিতে হয়।এর মাঝে যারা একটু মাথা উঁচিয়ে প্রতিবাদ মূখর হয়,সমাজ তাকে কলঙ্কিনী আখ্যা দেয়।তাইতো মেয়েরা সারাজীবন জলে ভাসা পদ্ম হয়ে কখনো বাবার বাড়ি কখনো শশুর বাড়ি অথবা স্বামীর বাড়ি বা স্বামীর অবর্তমানে ছেলের বাড়ি ঘুরে বেড়ায়।নিজের বাড়ি বলতে মেয়েদের কিছুই নেই।বাবার বাড়িতে কথা বললে বলে শশুর বাড়িতে গিয়ে বলো।শশুর বাড়িতে বললে বলে এটা কি বাপের বাড়ি পেয়েছ?স্বামীর অবর্তমানে ছেলের বাড়ির অপ্রয়োজনীয় জঞ্জাল।ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়।ব্যতিক্রম না থাকলে তো এই পৃথিবী বাসের অযোগ্য হয়ে যেত।সুন্দর এই পৃথিবীকে সুন্দর রাখতে সুষমা মন্ডিত করতে নারী পুরুষ উভয়ের মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।একজনকে ছাড়া অন্যজন অসম্পূর্ণ।সংসারে স্বামী স্ত্রী একে অন্যের পরিপূরক হতে হবে।সমাজে নারীর কাজের মূল্যায়ন করতে হবে।কন্যাশিশুকে নিরাপত্তা দিতে হবে।শুধুমাত্র নারী দিবস পালন করেই শেষ করলে হবে না।নারীর জন্য সম্মান জনক,নিরাপদ,ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে সবাইকে তৎপর হতে হবে।সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ,আন্তরিকতা,সদিচ্ছাই পারে বৈষম্যহীন সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে।
লেখক:দিলারা আফরোজ
সহকারী শিক্ষক
বাঁশবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মেহেরপুর
জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক ২০২৩
উপন্যাস ও গল্প লেখক