নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতীয় সিনেমা দেখিয়ে হলের হাল ফেরাতে চাইছিলেন দেশের প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা; সে বিষয়ে এখনও সরকারের পদক্ষেপ না দেখে সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
শনিবার ঢাকায় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ হুমকি দেওয়া হয়।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ অবস্থায় সিনেমা হল চালু রাখার আর কোনো বাস্তব যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না বিধায় বন্ধ করে দেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করি।
সিনেমা হলগুলোর মালিকরা দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় সিনেমা দেখানোর তদবির করে আসছেন। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদও সম্প্রতি বলেছেন, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সম্মত হলে সরকারের আপত্তি নেই।
এরপর সুদীপ্ত দাস ‘সাফটা’ চুক্তির আওতায় শাহরুখ খানের সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘পাঠান’ বাংলাদেশে মুক্তির ঘোষণা দেন। তবে এখনও তথ্য মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সায় পায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সুদীপ্ত দাস বলেন, এর আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আমাদের প্রতিনিধিদের সচিবালয় ডেকে বলেছিলেন, পরিচালক ও শিল্পী সমিতির অনাপত্তি থাকলে সরকার বছরে অন্তত ১০টি উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্র আমদানির অনুমতি দেবে।
চিত্রনায়ক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ‘সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ’র ব্যানারে প্রযোজক, পরিচালক এবং শিল্পী সমিতির নেতারা বছরে ১০টি ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ক্ষেত্রে অনাপত্তি জানিয়ে লিখিত প্রস্তাবনা তথ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দেন।
সব বাধা অপসারিত হওয়ার পরও আমদানির অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতা ‘না’ সূচক মনোভাবের পরিচায়ক।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান নেতৃত্ব শর্ত সাপেক্ষে হিন্দি সিনেমা আমদানিতে রাজি হলেও প্রকাশ্যে আপত্তি জানিয়েছেন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। হিন্দি সিনেমা আমদানির প্রবল বিরোধিতায় নেমেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুও।
প্রেক্ষাগৃহের উন্নয়নে ঋণ দিতে সরকারের হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন প্রসঙ্গে লায়নস সিনেমা হলের মালিক মির্জা আব্দুল খালেক বলেন, আমরা লোন নিয়ে সিনেমা হল বানাব। নিজের সম্পত্তি বন্ধক রেখে লোন নিতে হবে। সিনেমা যদি না চলে, আমার হলও যাবে, নিজের সম্পত্তিও যাবে। এখন যে সব ছবি মুক্তি পাচ্ছে, এসব ছবি দিয়ে কোনোদিনই হলের টাকা উঠবে না।
তিনি বলেন, একটা-দুইটা ছবি যদি দেশে ভালো ব্যবসা করে, অনেক মানুষ উদ্বুদ্ধ হবে হল নির্মাণে। হল বাড়লে ব্যবসা বাড়বে। তখন ব্যাংকও টাকা দিবে। তা না হলে এই ঋণের টাকা কেউ নেবে না, ব্যাংকও ঋণ দেবে না।
বিদেশি সিনেমা এলে দেশের অনেক শিল্পী কলাকুশলী বেকার হয়ে পড়বেন বলে যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে- তা মেনে নিয়েই খালেক পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, এখন কি সিনেমার শিল্পী, কলাকুশলীরা ভালো আছেন?
সরকার দাবি মেনে না নিলে কবে নাগাদ হল বন্ধ করা হবে- প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, আগামী ঈদের আগেই অর্থাৎ এপ্রিল মাসের মধ্যে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।