লাখোকণ্ঠ টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: স্বাধীনতার নেতা বঙ্গবন্ধু আমরা তাকে ছাড়তে পারি না ।শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটিতে গ্রামে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের আগে এসব কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী ।
বড় ভাই সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে উদ্দেশ্য কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনার হাজার হাজার নেতাকর্মী ছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আপনার লাখ নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু হত্যায় রুখে দাঁড়াতে পারেনি। আপনাকে যখন আওয়ামী লীগ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, আপনার পক্ষে ১০টা নেতাও দাঁড়াতে পারেনি।
বড় ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, আমি আপনার বক্তব্য শুনেছি, ইসলাম সম্পর্কে আপনার বক্তব্যে একটা দাঁড়ি-কমাও ভুল নাই। কিন্তু আপনার লোকেরা কেউ তুলে ধরতে পারেনি। কিন্তু জয় সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন, জয় বাবা কেরা। কেরাতো আমাদের টাঙ্গাইলের ভাষা। তারপরের কথা ছিল জয় রাস্তার মানুষ না। জয় বঙ্গবন্ধুর নাতি। ভেবে-চিন্তে কথা বলতে হবে। আমার বোন শেখ হাসিনা, জয় বাবা কেরা এটা কানে নিয়েছেন, পরের কথাটা শুনতেও চান নাই। আমি তাকে সেই কথা শোনাবো, শুনিয়েওছি।
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, আমি বলে যেতে চাই, লতিফ সিদ্দিকী আমার পিতার সমান। আমার গায়ে হাত দিলে সেই হাত থাকবে, টিকবে। কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীর গায়ে হাত দিলে সে হাত টিকবে না। রাজনৈতিক সমালোচনা করা যাবে। রাজনীতির বাইরে লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে কোন কথা বলা যাবে না। আমরা টাঙ্গাইলে ঘুষখোরদের হাত থেকে, গুন্ডাদের হাত থেকে ও দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে বাঁচাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানকে দেখতে পারতেন না বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী। তবে আমার বাবা জিয়াউর রহমানকে দেখতে পারতেন। কারণ তৎকালীন সময়ে বাবার যখন পা ফোলা ছিল, তখন জিয়াউর রহমান গিয়ে পা টিপতেন। আমাদের পরিবারে কিন্তু কৃতজ্ঞতাবোধ আছে। জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমার বাবা কোর্টে যাচ্ছিলেন। ঠিক ওই সময়ে টাঙ্গাইল শহরের কুমুদিনী কলেজের সামনে বাবাকে দেখে জিয়াউর রহমান গাড়ি থেকে নেমে তার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেছিলেন। এসব কারণে আমার বাবা জিয়াউর রহমানের খারাপ কথা শুনতে পারতেন না। শেষ দিন পর্যন্ত জিয়াউর রহমানকে তিনি সন্তানের মতো দেখেছেন।
তিনি বলেন, আজকের থেকে শুরু হলো আমাদের কাজ। আমাদের যাত্রা শুরু হলো। সারা দেশে কি হবে জানি না, তবে আমরা টাঙ্গাইলকে সম্মানিত করব। বড় ভাইকে বলতে চাই, আপনার মতের বিরুদ্ধে আপনাকে কিছুই করতে হবে না। পারলে আমাকে সাহায্য কইরেন, না পারলে আপনাকে আপনি সাহায্য কইরেন। মানুষকে সাহায্য কইরেন। জীবনের শুরু যেটা দিয়ে সেই শুরুকে যাওয়ার কালে কলঙ্কিত কইরেন না। আল্লাহকে ভরসা করুন। আমাদের সামনে বিকল্প নাই, আমাদের সামনে স্বাধীনতা। স্বাধীনতার নেতা বঙ্গবন্ধু। আমরা তাকে ছাড়তে পারি না। যে যাই বলুক। বরং আওয়ামী লীগ ঠিক লাইনে নাই। বঙ্গবন্ধু কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ করেছিলেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা, তার ছোট ভাই আবুল মনসুর আজাদ সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন।
এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অন্যান্য নেতা কর্মীসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।