ইউটিউব চ্যানেলকে টেলিভিশন চ্যানেল দাবি করে চলছে ‘নিউজ ব্যবসা’। পারিবারিক কলহ, সামাজিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক থেকে শুরু করে ব্যক্তির সাধারণ দ্বন্দ্বও ঘটা করে আপলোড করা হয় সেখানে। পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিটি কনটেন্টের জন্য সুবিধাভোগী বা স্বার্থান্বেষী মহলের কাছ থেকে নেওয়া হয় চাহিদা অনুযায়ী অবৈধ টাকা। আবার চাহিদা মতো টাকা না পেলে উল্টো নেতিবাচক তথ্যও আপলোড করা হয়।
উপজেলা থেকে গ্রাম পর্যায়ে তথাকথিত সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছেন এর মালিক দাবীদার আলমগীর অপু। তাদের মাধ্যমেই চলছে টাকার লেনদেন। সেই টাকায় হয়েছেন গাড়ি-বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ নানা সম্পদের মালিক। তার দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ নগর থেকে শুরু করে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। যাদের সহযোগীতা নিয়ে শুরু করেছেন এই চ্যানেল, কারনে অকারনে বিভিন্ন কৌশলে অনেককে বাদ দিয়ে নিজে বনে গেছেন একক অধিপতি। চট্টগ্রামের বারেক বিল্ডিং এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন এই চ্যানেলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ভালো কিছু শিখতে পারছেনা বরঞ্চ, চট্টগ্রামের আসল আঞ্চলিক ভাষাকে বিকৃত করে সারা বিশ্বের সামনে খারপ ভাবে উপস্থাপন করা হয়। এটি কতটুকু আইন সঙ্গত তা ক্ষতিয়ে দেখা উচিৎ।
সরকার সম্প্রতি অনলাইনভিত্তিক নিউজ পোর্টালগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করে চট্টগ্রাম থেকে বেশ কয়েকটি পোর্টাল নিবন্ধনের নাম জমা পড়ে । এর মধ্যে সিপ্লাস টিভিও ছিল; কিন্তু জমি দখল, মাদক বাণিজ্য, ক্যাসিনো কাণ্ডে সম্পৃক্ততাসহ নানা কারণে সেটি নিবন্ধন পায়নি বলে জানিয়েছেন একটি গোয়েন্দা সংস্থা।
গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্যক্তি আলমগীর অপুর অর্থ আয়ের অন্যতম উৎস সিপ্লাসে নিউজের মাধ্যমে হয়রানি করে চাঁদাবাজি ও ক্যাসিনো ব্যবসা। চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও লালখান বাজারের কমিশনার প্রার্থী বেলালের সাথে যৌথভাবে আলমগীর অপুর নগরীর ওয়াসার মোড়ের Rangs শোরুমের ১১ তলায় ক্যাসিনো টেবিল ছিল ৩টি, যেখানে র্যাব অভিযান চালায়। যমুনা টিভির রিপোর্টার আরিফুর সবুজ ছিল ঐ অভিযানে। এছাড়াও দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের (১০ কোটি টাকা) অপরাধে এফবিআই তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ও তদন্তে নামে। দুই বাংলাদেশী ও বাংলাদেশী দূতাবাসের সহযোগিতায় মুচলেকা দিয়ে ( আজীবন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা এই মর্মে) দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে ও দুবাই হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে যা ২০১৬ সালের ডিসেম্বর আমেরিকায় বাংলাদেশ এম্বেসির নথিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দেড় দশক আগেও আলমগীর অপু নিজেকে জাহির করতেন ছাত্রনেতা হিসেবে। চট্টগ্রাম নগরীর সিটি কলেজ কেন্দ্রিক কিছু অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যেত। তবে পদপদবি ছিল কি না, তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর প্রশ্ন। ছাত্রনেতার খোলস ভেঙে এরপর তিনি নাম লেখান সাংবাদিকতায়। স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে ও এই চ্যানেলের বদৌলতে অপুর গড়ে উঠেছে গোপন সখ্যতা। আওয়ামী লীগের অনেক সৎ ও সিনিয়র নেতার চরিত্র হননের একটি মিশন নিয়েও নির্বাচন কেন্দ্রিক সামনে অগ্রসর হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছেন। । অভিযোগ উঠেছে, এই চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশের নামে আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন অপু। এমনকি নগরের ওয়াসার মোড়ে যেখানে তিনি বসেন, সেটিও দখল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপুর হলুদ সাংবাদিকতায় বিব্রতকর ও ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের মূলধারার সাংবাদিকরা। তবে নিজের প্রতিষ্ঠান সি প্লাসে এসে তিনি বলেন তার বিরদ্ধে একাটি মহল সড়যন্ত্র করছেন বলে দাবী করেন।
তার বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে লাখোকণ্ঠের হাতে অনেক তথ্য উপাত্ত জমা হয়েছে। পরবর্তী ধাপে তা প্রকাশ কারা হবে।