চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ টানেল এর যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল এটি। কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে “ওয়ান সিটি টু টাউন” গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই টানেল উদ্বোধনের ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে গড়ে উঠবে নতুন শিল্প কারখানা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর থেকে কাঙ্খিত টানেল দিয়ে পারাপারের স্বপ্ন পূরণ হবে। আমরা চট্টগ্রামবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। শুধু চট্টগ্রাম নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্য এটি একটি গর্বের বিষয়।
টানেলের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হারুনুর রশিদ বলেন, টানেল এর দুই সড়ক পথে কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। টোল প্লাজা ও এপ্রোচ রোড নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। উদ্বোধনের পর দিন ২৯ অক্টোবর থেকে টানেল দিয়ে গাড়ী চলাচল করতে পারবে। টানেলটির নির্মাণের মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকী ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ (বিশ) বছর মেয়াদী এই ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানী লি: টানেল নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। তবে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের ব্যয় ১ শত ৬৪ কোটি টাকা বেড়েছে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা যায়।
বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার। এই সুড়ঙ্গটি নির্মিত হলে এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ এবং দক্ষিণ এশিয়ার নদীর তলদেশে প্রথম ও দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ পথ। কর্ণফুলী নদীর মধ্যভাগে কর্ণফুলী সুড়ঙ্গ অবস্থান করবে ১৫০ ফিট গভীর। চট্টগ্রামের শহর প্রান্তে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমীর পাশ দিয়ে শুরু হওয়া এই সুড়ঙ্গ কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা প্রান্তে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লি: এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লি: কারখানা মাঝামাঝি স্থান দিয়ে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে পৌঁছাবে।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং টানেল প্রকল্পে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ২য় টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। সর্বশেষ গত বছরের ২৬ নভেম্বর টানেলের ১ম টিউবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৪ দলের সমন্বয়ক আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল আমাদের দেশের সম্পদ। নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার। এই দিনটি ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে পৃথিবীর বুকে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল আমাদের স্বপ্নের প্রত্যাশা পূরণে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। ২৮ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করে যোগাযোগের নতুন দিগন্তের শুভ সূচনা করবেন। চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে এবং ঐ দিন কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দিবেন বলে আমরা আশা করছি।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুত। আগামী ২৮ অক্টোবর জনসভায় দশ লাখ লোকের সমাগম হবে। চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামীলীগের উদ্যোগে সকল প্রস্তুত ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন সেই মাহিন্দক্ষণের অপেক্ষায়। বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববাসীর কাছে নতুন করে পরিচয় লাভ করবে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।